নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা । ১০০ টি রোগের ঔষধ নিমপাতা

 ভূমিকা

নিম গাছ ঔষধি গাছ। এর পাতা, ছাল ও ফল ঔষধি হিসাবে ব্যবহিত হয়। নিম গাছ গ্রাম গঞ্জে যে কোন জায়গাতে পাওয়া যায়।

চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা

নিম পাতা আমাদের অনেক উপকারে আসে। নিম পাতা থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মক্তি

পাওয়া যায়। নিম পাতা থেকে 22 টি রোগ নিরাময হয়। নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।


চর্মরোগে নিম পাতার ব্যাবহার

অসাবধানতার কারনে আমাদের দেহে খোসপাচরা বা চুলকানি হয়ে থাকে কোন টাকা পয়সা ছাড়াই নিম পাতার রস দিয়ে এই রোগ সারানো যায়। অথবা শুকনো পাতা গুড়া করে সরিষা বা নারিকেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে খুব তারাতারি খোসপাচরা ভালো হবে।


দাঁতের রোগ সারাতে

যারা দীর্ঘদিন ধরে দাঁতের সমস্যায় ভূগেছেন তারা নিম পাতা শুকিয়ে তেলের সাথে মিশিয়ে দুবেলা দাঁতের ক্ষত স্থানে লাগালে আশা করি দঁতের যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাবেন। নিম পাতার রস দিয়ে প্রতিদিন কুলকুলা করলে মাড়ি ফোলা সহ দাঁতের ব্যাথা দূর হবে শুধু তাই নয় আপনার দাঁতকে মজবুত করবে।


কৃমি নাশক হিসেব

বিশেষ করে বাচ্চারা কৃমিতে আক্রান্ত হয়। তখন বাচাদের পেট বড় হয় এবং রোগা হয়ে যায়। নিম পাতার রস হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে এক থেকে দুই চামচ করে খাওয়ালে কৃমির যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাবে। 

চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা

চুলে খুশকি বা উকুন হলে নিম পাতা দিয়ে সহজেই দূর করতে পারি। নিম পাতা ভালো করে বেটে তার রস ভালো ভাবে মাথায় মিশিয়ে নিতে হবে। এক ঘন্টা পর শ্যাম্প দিয়ে মাথা ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে কয়েক দিক করলে চিরতরে খূশকি বা উকুন দূর হবে। 

ওজন কমাতে নিমপাতা

আপনে যদি পেটের চর্বি কমাতে চান এই পদ্ধতি অবলম্বন করুন। নিমের ফুল ও পাতা দিয়ে জুস বানিয়ে নিয়মিত খেলে আশা করি আপনার পেটের চর্বি কমে যাবে। 

ভাইরাস নির্মুলে

জানা অজানা ভাইরাস আমাদের দেহের অনেক ক্ষতি করে আমরা তা বুঝতে পারিনা। তাই হালকা গরম পানিতে নিম পাতা ভিজিয়ে রাখার পর সেই পানি দিয়ে গোসল করলে অজানা ভাইরাস গুলো বিতারতি হয়। ফলে দেহ সুস্থ থাকে। পক্স, হাম ও অন্যান্য রোগে নিমপাতার রস লাগিয়ে দিত। 


ঠান্ডা লেগ বুকে ব্যাথা

অনেক সময় ঠান্ডা লেগে বুকে ব্যাথা করে। বুকে কফ জমে গেলে সামান্য গরম পানিতে নিমপাতার রস দিয়ে খেলে আরাম বোধ করবেন।


এলার্জিতে নিম পাতার ব্যাবহার 

এলার্জি জনিত সমস্যা দেখা দিলে নিম পাতা দিয়ে গোসল করলে এলার্জি চলে যাবে। এছাড়া কাঁচা হলুদের সাথে নিমপাতা মিশিয়ে এলার্জি  স্থানে লাগিয়ে রাখলে এলার্জি ভালো হবে। 


ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যাবহার

আপনে যদি ব্রণের যন্ত্রনায় ভূগে থাকেন তাহলে গুড়ো নিমপাতার সাথে গরম পানি মিশিয়ে মুখ ধূয়ে নিলে আরাম বোধ করবেন এবং ব্রণ  ভালো হয়ে যাবে। এ ভাবে প্রতিদিন করবেন।


রক্ত পরিষ্কার করতে 

নিম পাতার রক্ত রক্ত নালী পরিষ্কার রাখে। রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। রক্ত কনিকা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে রক্ত চাপ নিয়ন্তনে রাখে। প্রেসার কম বা বেশি হওয়ার ভয় থাকে না।


নিম পাতার ক্ষতিকর দিক

নিম পাতার যতই গুনাবলি থাকুক না কেন কিছু খারাপ দিকও রয়েছে। নিম পাতার অপকারিতা কি তা সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো। 


বেশিদিন খালি পেটে নিম পাতা খাওযা উচিত নয় এতে হিতে বিপরীতে হতে পারে।

যারা সন্তান নিবেন বা গর্ভাবস্থায় আছেন তারা নিম পাতা থেকে দূরে থাকেন কারন নিমপাতা গর্ভপাতের কারন হয়ে থাকে। 


অপারেশন রোগীরা অন্তত দুই সপ্তা আগে থেকে নিম পাতা খাওয়া বন্ধ করুন কারন এত সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত নিম পাতা খাবেন না। 


নিম পাতা খাওযার পর কারো যদি মাথা ব্যাথা, বমি ও ডাইরিয়া হলে নিম পাতা থেকে দূরে থাকবেন।


নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ মুখে দিলে কি হয়

নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। মুখে যেখানে ব্রণ রয়েছে সেখানে ভালো ভাবে লাগিয়ে রাখুন। এক ঘন্টা পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধূয়ে নিবেন। এভাবে কয়েক দিন করলে ব্রণের সমস্যা দূর হবে। নিয়মিত ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যাবহার করলে জাদুর মত আপনার ব্রণ দূর হবে এবং ত্বক ভালো রাখবে।


নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

নিম পাতা বা নিমের গুড়া এর সাথে চন্দন মিশিয়ে তার সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে এক ধরনের পেস্ট তৈরি করুন। সেই পেস্ট ভালো করে মুখমন্ডলে লাগিয়ে রাখুন। এক ঘন্টা বা শুকনো হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর ঠান্ডা পনি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এর পর আপনার পছন্দের অ্যালোভেরার জেল মাখিয়ে নিবেন তাহলে আপনার ত্বক মোলাইন থাকবে। 


ছাড়পোকা তাড়াতে নিমপাতা

ছাড়পোকা মানুষের জন্য বিরক্তিকর প্রাণী। ঘড়ের যে কোন প্রান্তে এরা বংশ বিস্তার করে। বিশেষ করে বিছানায় এরা বাসা বাধে। যে বাড়িতে এক বার ছাড়পোকা হয় সেই বাড়ির লোকজন অতিষ্ট হয়ে পড়ে কারন এরা মানুষের রক্ত চুষে খায়। ছাড়পোকা আকারে ছোট হয়ে থাকে। ছাড়পোকা তাড়ানোর উপায় হিসাবে নিম পাতা খুব কার্যকর। ছাড়পোকা মারার উপায় নিচে বর্ণনা করা হল।

ঘড়ের যে স্থানে ছারপোকা রয়েছে সেই স্থানে তাজা নিম পাতা গাছ থেকে পেড়ে বিছিয়ে রাখুন। এই ভাবে সাতদিন করবেন। অবশ্যয় প্রতিদিন নতুন টাটকা নিমপাতা বিছানায় ছিটিয়ে রাখতে হবে। এতেও যদি কাজ না হয় তাহলে নিম পাতার সাথে ন্যাপথলিন মিশিয়ে বিছানায় ছিটিয়ে রাখুন। আশা করি ছাড় পোকা ঘড়ে আর থাকবে না। ফলে ঘুমের বেঘাত আর হবে না। 

চর্মরোগে নিম পাতার ব্যাবহার

যে কোন চর্ম রোগের জন্য নিমপতা চমৎতকার কাজ করে। যারা চর্ম

 রোগে ভূগছেন তারা দয়া করে নিম পাতার রস ব্যাবহার করুন আশা করি চর্ম
রোগ দূর হয়ে যাবে।

শেষ কথা

নিম পাতার গুনাগুন লেখে শেষ করা যাবেনা। নিমপাতা এমনি একটি ঐষধী গাছ যা সব ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

সকালে খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে শরীর সুস্থ থাকে।

আমাদের সকলের উচিত বাড়িতে একটি হলেও নিম গাছ লাগানো। প্রতিদিন নাম গাছের ডাল দিয়ে ব্রাশ করলে দাঁতে কোন প্রকার রোগ থাকবে না।


আশা করি এই পোষ্টটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। মানুষ মাত্রই ভূল তাই এই পোষ্টে কোন কিছু ভূল থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ


কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন: এলার্জির ঔষধ নিম পাতা

উত্তর: এলার্জিকে চিরতরে বিদায় করতে চাইলে এক চামচের তিন ভাগের এক ভাগ নিম পাতার গুড়া এবং এক চামচ ভূষি মিশিয়ে পানিতে এক ঘন্টা ভেজানোর পর সেটি প্রতিদিন খেলে আশা করি এক মাসের মধ্যে এলার্জি দূর হবে। 


প্রশ্ন: নিম পতা চুলে দিলে কি হয়

উত্তর: নিম পাতা চুলে দিলে মাথার খুসকি দূর হয়। চুলের গোড়া শ্ক্ত ও মজবুত হয়। ফলে চুল অকালে ঝড়ে পড়ে না।


প্রশ্ন: নিম পাতার রসের উপকারিতা

উত্তর: নিম পাতা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে ডায়াবেটিস কমে যায়। নিম পাতার রস রক্ত নালীকে পরিষ্কার করে ফলে রক্ত চলাচলে কোন বাধা থাকে না।


প্রশ্ন: নিম পাতা কোন রোগের মহৌষধ

উত্তর: নিম পাতা চর্ম রোগের মহৌষধ। এছাড়াও ১০০ টি রোগরে মহৌষধ হিসাবে কাজ করে।


প্রশ্ন: নিম পাতা ইংরেজি

উত্তর: এর ইংরেজি নাম হল Neem. এর বৈজ্ঞানিক নাম Azadirachta Indica.


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url