পাথরকুচি পাতার উপকারিতা অপকারিতা ও পাথরকুচি পাতার বৈশিষ্ট
পাথরকুচি পাতা সকলের পরিচিত নাম। পাথর কুচি একটি ঔষধি গাছ।
প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে পাথর কুচি পাতা ব্যাবহার করে থাকে। পাথরকুচি পাতা বাড়ির আশে পাশে ঝোপ-ঝাড়ে এই গাছ পাওয়া যায়। পাথরকুচি গাছ এক থেকে দুই ফিট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। পাথরকুচি পাতার ঔষধি গুনাগুন বর্ণনা করা হল
পাথরকুচি পাতার উপকারিতা
১/ কিডনি পাথর সরানোর উপায় হিসাবে: কিডনি থেকে পাথর অপসারনে পাথরকুচি পাতা গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। প্রতিদিন ২ থেকে ৩টি পাতার রস খেলে এই ধরনের রোগ তেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
২/ পাইলস এর চিকিৎসা কাজে: যাদের পাইলস এর সমস্যা আছে তারা কয়েকটি পাথরকুচি পাতা এবং গোল মরিচ মিশিয়ে খেলে পাইলস বা কোষ্ঠকাঠিন্য ভাল হবে।
৩/ শিশুদের পেট ব্যাথা হলে: মিশুদের পেটে ব্যাথা করলে পাথরবুচির পাতার রস পেটে মালিম করলে শিশুটি অনেক আরাম বোধ করবে।
৪/ পেট ফাঁপার চিকিৎসা হিসাবে: খাওয়ার অনিয়ম হলে বা কোন কারনে পেট ফেঁপে গেলে দুই চামচ পাথরকুচি পাতার রস চিনির সাথে মিশিয়ে হালকা গরম করে খেলে আরাম বোধ করবেন।
৫/ জন্ডিস এর প্রতিকার হিসেবে: জন্ডিস নিরাময়ে এবং লিভারের যে কোন সমস্যায় পাথরকুচি পাতার রস গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৬/ বিষাক্ত পোকা কামড়ালে: বিষাক্ত জাতীয় পোকা কামড়ালে ব্যাথা বা জালা হলে পাথরকুচি পাতার রস সেই সাথে দিলে আরাম পাওয়া যায়।
৭/ ত্বকের যত্ন নিতে: পাথরকুচি পাতায় প্রচুর জল থাকে ফলে ত্বকের জন্য খুব উপকারী। ত্বকের জালাপোড়া হলে পাথরকুচি পাতার রস ত্বকে দিলে আরাম পাওয়া যায়।
৮/ মৃগী রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা হিসাবে: ৫ থেকে ১০ ফোটা পাথরকুচি পাতার রস মুখে দেওয়ার পর পেটে গেলেই এই রোগের উপশম হয়।
৯/ পেশাবের জ্বালাপোড়া: পেশাবের জ্বালাপোড়া নিরাময়ে পাথরকুচি পাতা বিশেষ ভুমিকা রাখে।
পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকর দিক বা পাথরকুচি পাতার অপকারিতা
যে কোন জিনিসেরই অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তেমনির পাথরকুচি অপকারিতা রয়েছে। সে গুলো হলে
১) অতিরিক্ত পাথরকুচি পাতার রস খেলে মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।
২) পাথরকুচি পাতা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেলে ক্ষুধা মন্দা দেখা দিতে পারে।
৩) বেশি পরিমান রস খেলে ডাইরিয়া পর্যন্ত হতে পারে।
৪) পিত্ত থলির সমস্যা হতে পারে।
৫) অতিরিক্ত পাথারকুচি পাতার রস খেলে পেটের নানা বিধি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পাথরকুচি পাতার বৈশিষ্ট বা পাথরকুচি গাছের বৈশিষ্ট্য
পাথরকুচি পাতার বৈশিষ্ট্য গুলো হলো
কিডনিতে পাথর হলে পাথরকুচি পাতা খুব ভালো কাজ করে। পেট ফাঁপা রোগ হলে এর পাতা খেলে ভালো হয়ে যায। পাইলস এর সমস্যা হলে পাথরকুচি পাতা খেতে পারেন। জন্ডিস রোগ তাড়াতে এর অবদান অনেক।
পাথরকুচি পাতা খাওয়ার নিয়ম
পাথরকুচ পাতার রস বের করে ঠান্ডা পানির সাথে প্রতিদিন দুই থেকে তিন চামচ খেতে হবে। অথবা কয়েকটি পাথরকুচি পাতা নিয়ে এর রস চিনির সাথে মিশিয়ে হালকা গরম করে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
কাঁচা পাথরকুচি পাতা নিয়ে পানি দিয়ে ধুয়ে একটি বা দুটি পাতা লবন এর সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে উপকার পাওয়া যায়। পাথরকুচি পাতার রস সরবত বানিয়েও খাওয়া যায। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পাথরকুচি পাতার রস খেলে গুনা গুন ভালো পাওয়া যায়। পাথরকুচি পাতার রস চিয়া সিড এর সাথে খেলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে। তবে মনে রাখবেন অতিরিক্ত খাবেন না। অতিরিক্ত সবসময়েরে জন্য ক্ষতিকর।
খালি পেটে পাথরকুচি পাতা খেলে কি হয়
খালি পেটে পাথরকুচি পাতা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায। যারা সরাসরি পাথরকুচির পাতা খেতে পারেন না তারা মিষ্টি জাতীয় বা অন্য কিছু মিশ্রিত করে খেতে পারেন।
চুলের যত্নে পাথরকুচি
চুলের যত্নেও পাথরকুচি পাতার রস ব্যাবহার করা হয়। যাদের মাথার চুল দূর্বল বা উঠে যায়। তারা পাথরকুচি পাতার রস এর সাথে নিম পাতার রস মিশিয়ে চুলে এক ঘন্টা লাগিয়ে রাখলে আপনার চুলের অনেক উপকার হবে।
পরশেষে বলা যায় পাথরকুচি পাতা আমাদের অনেক উপকারে আসে। ঔষধি গাছ হিসাবে এর ভুমিকা অপরিসীম। পাথরকুচি পাতা খেলে আমাদের শরীর ভালো থাকবে। আমাদের বাড়ির আশে পাশে পাথরকুচি পাতা পাওয়া যায়। পাথরকুচি পাতা অতিরিক্ত খাবেন না এত শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
আমি এই সকল তখ্য বিভিন্ন অয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করেছি। সুতরাং কোনকিছু ভূল থাকলে অবশ্যয় ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। এই আর্টিকেল পড়ে আপনার উপকার হলে আমার পরিশ্রম সফল হবে। আপনে সুস্থ থাকেন ভালো থাকেন ধন্যবাদ।
কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন: পাথরকুচি পাতা কখন খেতে হয়
উত্তর: পাথরকুচি পাতা সকালে খালি পেটে খাওয়ায় উত্তম।
প্রশ্ন: পাথরকুচি পাতার ইংরেজী নাম
উত্তর: পাথরকুচি পাতার ইংরেজী নাম হল American Life Plant.
প্রশ্ন: পাথরকুচির বৈজ্ঞানিক নাম
উত্তর: পাথরকুচির বৈজ্ঞানির নাম হল Kalanchoe pinnata.
প্রশ্ন: পাথরকুচি কিসের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে
উত্তর: পাথরকুচি পাতা দিয়ে বংশ বিস্তার করে। এই পাতা মাটির রসালো জায়গাতে রেথেদিলে আপনা আপনি গাছ জন্মায়