পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতির নামের তালিকা

 পুরাতান কৃষিযন্ত্রপাতি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে কৃষিযন্ত্রপাতিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। এর ফলে নিত্য নতুন যন্ত্রপাতি তৈরি হওয়ায কৃষকেরা আর পুরাতন যন্ত্রপাতি ব্যাবহার করছেনা। কৃষিতে যেমন উন্নতি ঘটছে তেমনি আমাদের দেশীয় পুরাতন কৃষিযন্ত্রপাতি হারিয়ে যাচ্ছে। 

পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতির নামের তালিকা

আজকে আপনাদের সামনে পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতির নামের তালিকা তুলে ধরব। এক বার ভেবে দেখেন আগের সময় পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতি ছিল এক মাত্র ভরসা। আগে  কৃষকেরা অনেক কষ্ট করে ফসল ফলাত। আমাদের

উচিত দেশীয় পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতি ধরে রাখা। এক সময় এই সকল দেশীয় পুরাতন ‍কৃষি যন্ত্রপাতি আমাদের দেশ থেকে হারিয়ে যাবে। 


পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতির নাম

১) জাঁত: জাঁত হল কৃষিকাজে ব্যবহিত পুরাত পানি সেচ যন্ত্র। অথ্যাৎ আগে কৃষি জমিতে পানি দেওয়ার কাজে জাঁত যন্ত্র ব্যবহার করা হত। জাঁত যন্ত্রটি কাঠ অথবা শক্ত টিন বা শিট জাতীয় কিছু দিয়ে তৈরি করা হত। 


২) লাঙল: লাঙল হল কৃষিকাজে ব্যাবহিত সবচাইতে পুরাতন কৃষি যন্ত্র।  লাঙল দিয়ে জমি চাষ করার কাজে বহুল ব্যবহিত একটি জনপ্রিয় কৃষি যন্ত্র। লাঙল ও জোয়াল দিয়ে গরুর সাহায্য নিয়ে জমি চাষ করত কৃষক। কাঠ ও বাঁশ দিয়ে লাঙল  তৈরি করা হত। এবং লাঙল এর ফলা হিসাবে লোহা ব্যবহার করা হত।


৩) জোয়াল: জমি চাষ করার কাজে লাঙল এর সাথে ব্যবহার হত। অথ্যাৎ লাঙল, জোয়াল ও গরু দিয়ে জমি চাষ করে কৃষষকেরা জমিতে ফসল ফলাত। এক মাত্র হাতিয়ার ছিল লাঙল, জোয়াল ও গরু। জোয়াল কাঠ দিয়ে বানানো হত। দুটি গরুর ঘাড়ের উপর বেঁধে দেওয়া হত।


৪) নিড়ানি: নিড়ানি দিয়ে কৃষকেরা জমির আগাছা পরিষ্কার করার কাজে ব্যবহার করত। নিড়ানি বানানো হত লোহা দিয়ে এবং হাতল থাকত কাঠের বা বঁশের।


৫) সেঁউতি: সেঁউতি একটি পুরাতন পানি সেচ যন্ত্র। এটি টিন বা বাঁশ বা কাঠ দিয়ে তৈরি করা হত। নিচু থেকে উঁচু জমিতে পানি তুলতে এই যন্ত্র ব্যবহার করা হত। সেঁউতি যন্ত্র ব্যাবহার করার জন্য দুটি লোকের প্রয়োজন হত। 


৬) কোদাল: কোদাল একটি জনপ্রিয় কৃষি যন্ত্র। এটি দিয়ে মাটি খনন ও আগাছা পরিষ্কার করার কাজে ব্যাবহিত হয়। কোদাল লোহার তৈরি এবং এর হাতল হিসাবে ব্যবহার হত বাঁশ।


৭) কাস্তে: কৃষকের বগ হাতিয়ার কাস্তে। বর্তমানেও এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। কাস্তে দিয়ে কৃষকেরা ধান কাটার কাজে ব্যবহার করে। এটি লোহা দিয়ে তৈরি এবং এর হাতল কাঠ।


৮) মই: জমি চাষ করার পর মাটি সমান করতে মই যন্ত্রটি ব্যবহার করে থাকে। মই বাঁশ দিয়ে তৈরি। দুটি গড়ুর সাহায়্য নিয়ে এই যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। লাঙল দিয়ে জমি হাল চাষ করার পর মাটি এব্র-থেব্র হয়ে যায়। তখন মই দিয়ে মাটি সমান করা হয়। মাটি সমান হয়ে গেলে ধান লাগানোর জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠে।


৯) কৃষকের মাথাল: কৃষকেরা যখন মাঠে কাজ করে রোদ ও বৃষ্টি হইতে হইতে রক্ষা পেতে এক ধরনের টোপরের মত  মাথায় ঝাঁকা ব্যাবহার করে একরে কৃষকের ভাষায় মাথাল বলে। এটি বাাঁশ দিয়ে তৈরি করে। 



১০) বেতের দাড়ি পাল্লা: আগের যুগে ধান চাল ওজন করার জন্য এক ধরনের বেতের দাড়িপাল্লা ব্যবহার করা হত। এই পাল্লাপটি বেত দিয়ে সুন্দর করে তৈরি করা হত।


১১) গরুর গোমাই: গরুদিয়ে যখন জমি চাষ করানো হত সেই সময় চাষ করা অবস্থায় গরু যাতে কিছু খেতে না পারে, গরুর মুখে এক ধরনের মাস্ক পড়ানো হত। গরুর মুখে পড়ানো হত বলে এর নাম গরুর গোমাই বলে। এটি বাঁশ দিয়ে তৈরি।


১২) গড়ুর গাড়ি: কৃষি কাজে বা অন্যান্য কাজে যেমন মালপত্র আনা নেওয়ার কাজে একমাত্র বাহন ছিল গরুর গাড়ী। মাঠ হইতে ধান এবং খড় নিয়ে আসা হত এই বাহন দিয়ে। কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হত। এটি চালানোর জন্য গরু বা মহিষ এর সাহায্য নিতে হত।


১৩) সেন্টিফিউগাল পাম্প: কৃষি জমিতে পানি সেচের কাজে এই পাম্প কৃষকেরা ব্যবহার করত। বর্তমানে এই পাম্প এর ব্যবহার আর নেই বললেই চলে। ডিজের বা পেট্রোল দ্বারা এই পাম্প চালানো যেত। যে সকল এলাকাতে বিদ্যুৎ নেই শুধু সেই সকল এলাকাতে এই পাম্প কৃষকেরা ব্যাবহার করে। 


পাঁচটি পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতির নাম

পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতি নাম বলতে আমাদের দেশে কৃষি কাজে যে সকল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হত সে গুলোকে বুঝানো হয়েছে। বর্তমানে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির বিপ্লব ঘটায়ে আমাদের দেশীয় কৃষি যন্ত্রপাতি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশ কৃষি নির্ভর দেশ। আধুনিক যন্ত্রপাতি কৃষি কাজে ব্যবহিত হওয়াই কৃষকের কষ্ট অনেক কমে গেছে। এখন কম অর্থের দারা বেশী বেশী ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে। ফলে কৃষকেরা অনেক লাভবান হচ্ছে। ইতিমধ্যে উপরে পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতির নাম নিয়ে আলোচনা করেছি। দয়াকরে সেখান থেকে আপনারা নাম সংগ্রহ করে নিবেন। 


পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতির ছবি

পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতি এখন শুধু ছবি রয়ে গেল। কারন এই সকল যন্ত্র আর কৃষি কাজে ব্যবহার হয়না। আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের অনেক সুবিধা সৃষ্টি করেছে। কৃষকের কষ্ট লাঘব হয়েছে। অল্প খরচে ফলন বৃদ্ধি ও কম সময়ে ফলন ঘড়ে তোলা যায়। পুরাতন কৃষি যন্ত্রপাতির ছবি অতি শিঘ্রয় পোষ্ট করা হবে।


শেষে কিছু কথা

 মানুষ পরিবর্তন শিল। বিজ্ঞানীরা গবেষনার ফলে যে সকল আধৃনিক কৃষি যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করেছেন। তা প্রশংসনীয়। কারন যেখানে কৃষক ফসল ঘড়ে তুলতে অনেক সময় লাগত, কষ্ট হত ও ফলনও কম হত। আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষি কাজে ব্যবহারের ফলে এখন কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। বেশী ফলন হওয়াতে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে। 


কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন: বাংলাদেশে কৃষি মৌষম কয়টি?

উত্তর: বাংলাদেশে কৃষি মৌষম মোট তিনটি।


প্রশ্ন: বাংলাদেশে কৃষি জাদুঘড় কোথায় অবস্থিত?

উত্তর: ময়মনসিংঘে এক মাত্র কৃষি জাদু ঘড় অবস্থিত।


প্রশ্ন: বাংলাদেশে জাতী কৃষি দিবস কবে?

উত্তর: প্রতি বছর অগ্রহায়ন মাসের ১ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়।


প্রশ্ন: বাংলাদেশে বৃহত্তম কৃষি উদ্যান কোথায় অবস্থিত?

উত্তর: বাংলাদেশে কৃষি উদ্যান গাজীপুর জেলায় কাশিমপুরে অবস্থিত।


প্রশ্ন: কৃষি কাকে বলে?

উত্তর: মাটিতে কৃষকেরা শ্রমের বিনিময়ে উদ্ভিদ ও প্রানীর উৎপাদন ঘটাকে কৃষি বলে। অথ্যাৎ  বিজ্ঞান সন্মত ভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্পদ বৃদ্ধি ঘটানোর যে অনুশীলন তাকে কৃষি বলে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url